
		বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন শুধুমাত্র মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়াই ডায়াবেটিস বা রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, প্রতিদিনের কিছু সাধারণ ভুল– যেগুলো আমরা প্রায়ই খেয়াল করি না—সেগুলোই নীরবে বাড়িয়ে দিতে পারে ব্লাড সুগার।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, এমন কিছু অভ্যাস যা আপনার অজান্তেই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে:
পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
নিয়মিত কম ঘুম শরীরের ইনসুলিন কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ধরে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মোবাইল বা অন্যান্য ডিজিটাল স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুন।
পানি কম পান করা
শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে রক্তে শর্করার ঘনত্ব বেড়ে যায়। নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করলে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। গরমের দিনে অবশ্যই সঙ্গে পানি রাখুন।
ওষুধে অনিয়ম
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে নির্দিষ্ট সময় ও মাত্রায় ওষুধ খাওয়া জরুরি। নিজের মতো ওষুধ শুরু বা বন্ধ করবেন না। কোনো পরিবর্তনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সময়মতো না খাওয়া
অনেকেই কাজের ব্যস্ততায় এক বা একাধিক বেলা খাবার বাদ দেন। এতে শরীর লিভার থেকে সঞ্চিত গ্লুকোজ ছেড়ে দেয়, ফলে বাড়ে রক্তে শর্করা। তাই খাবারে অনিয়ম নয়—নিয়মিত ও সুষম খাবার খান।
কৃত্রিম মিষ্টি ব্যবহার
চিনির বিকল্প হিসেবে অনেকে কৃত্রিম মিষ্টি ব্যবহার করেন। কিন্তু এতে ইনসুলিনের মাত্রা ওঠানামা করে, যা বিপরীত ফল দিতে পারে। এ ধরনের বিকল্প ব্যবহার এড়িয়ে চলাই ভালো।
প্যাকেটজাত খাবারে অতিরিক্ত চিনি
অনেক প্যাকেটজাত খাবার স্বাস্থ্যকর মনে হলেও এতে লুকিয়ে থাকতে পারে উচ্চমাত্রার চিনি। খাবারের লেবেল দেখে তাতে থাকা চিনি ও কার্বের মাত্রা যাচাই করে তবেই খান।
অতিরিক্ত ব্যায়াম
পর্যাপ্ত পুষ্টি না নিয়েই অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে শরীরে চাপ পড়ে। এতে রক্তে কর্টিসল বাড়ে, ফলে বাড়তে পারে ব্লাড সুগার। তাই ব্যায়ামের সঙ্গে সঠিক ডায়েট মেনে চলুন।
আরও কয়েকটি অজানা কারণ জেনে নিন—
মানসিক চাপ
টেনশন বা উদ্বেগে শরীরে কর্টিসল নামে একটি হরমোন নিঃসরণ হয়, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়। প্রতিদিন অন্তত কিছু সময় ধরে ধ্যান, হাঁটাহাঁটি বা পছন্দের কাজে মন দিন।
অসুস্থতা
জ্বর, ইনফেকশন বা শরীর খারাপ থাকলে শরীরের প্রতিক্রিয়া হিসেবেও ব্লাড সুগার বেড়ে যেতে পারে। তাই অসুস্থতার সময় নিয়মিত সুগার টেস্ট করুন।
হরমোনের ওঠানামা
বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক চক্র, গর্ভাবস্থা বা মেনোপজে হরমোনে বড় পরিবর্তন আসে। এতে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হতে পারে। এসব সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে শুধু খাবার নয়, দৈনন্দিন অভ্যাসেও সচেতন হতে হবে। ছোট ছোট পরিবর্তনেই হতে পারে বড় উপকার।
মন্তব্য করুন