
		অফিস, মিটিং কিংবা নানা অনুষ্ঠানে চেহারায় যেন সব সময় একটা পারফেক্ট লুক থাকে, তাই অনেকেই রোজ মেকআপ করেন। ত্বকের ছোটখাটো দাগ, খুঁত ঢেকে দেয় মেকআপ। আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যায়। আবার কিছু পেশায় তো মেকআপ করাই বাধ্যতামূলক।
প্রতিদিন মেকআপ করলে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ বেশির ভাগ প্রসাধন সামগ্রীর মধ্যেই নানা রাসায়নিক থাকে। নিয়মিত এই রাসায়নিক ত্বকের সংস্পর্শে এলে ত্বক হয়ে যেতে পারে রুক্ষ, হতে পারে ব্রণ বা র্যাশের সমস্যা। ফাউন্ডেশন বা পাউডারের প্রলেপ ত্বকের লোমকূপের মুখ বন্ধ করে দেয়। তার ওপর ঘাম আর ধুলাবালিতে ত্বক আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তাহলে কি রোজ মেকআপ করা একেবারে বাদ দিতে হবে? মোটেই না। ত্বক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “রোজ মেকআপ করলে ত্বকের জন্য একটু বাড়তি যত্ন দরকার। মেকআপের আগে ও পরে সঠিক পদ্ধতি মেনে চললে ত্বক যেমন সুন্দর থাকবে, তেমনই সুস্থও থাকবে।”
ডাক্তারের পরামর্শে জেনে নিন কীভাবে রোজ মেকআপ করেও ত্বক থাকবে সুন্দর ও প্রাণবন্ত—
মেকআপের আগে ত্বক প্রস্তুত করুন
মেকআপ করার আগে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করা জরুরি। হালকা কোনো ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এরপর ত্বকের ধরন অনুযায়ী ভালো কোনো ময়েশ্চারাইজার লাগান। এতে ত্বক আর্দ্র থাকবে, রুক্ষ দেখাবে না।
প্রাইমার ব্যবহার করুন
লোমকূপ বড় হয়ে থাকলে মেকআপ করলেও তা ঠিকমতো ঢাকা পড়ে না। প্রাইমার এই সমস্যার সমাধান করে। এটি ত্বক মসৃণ করে তোলে। হালকা, ম্যাট ধরনের প্রাইমারই বেশি ভালো। টিন্টেড প্রাইমার এড়িয়ে চলতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
ত্বক-বান্ধব মেকআপ প্রডাক্ট বাছুন
তেলবিহীন, খনিজ সমৃদ্ধ ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা ভালো। ত্বক শুষ্ক হলে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত ফাউন্ডেশন বেছে নিতে পারেন। এতে ত্বক আর্দ্র থাকবে, লোমকূপের মুখ বন্ধ হবে না। তবে দিনের বেলায় ভিটামিন সি বা নিয়াসিনামাইডযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার না করাই ভালো, এতে রোদে ত্বক কালচে হয়ে যেতে পারে।
টিন্টেড সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন
যাদের মুখের কিছু অংশে কালচে দাগ আছে, তারা টিন্টেড সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন। এটি দাগ ঢেকে দেয় এবং ত্বকের রং সমান দেখায়। চাইলে ফাউন্ডেশনের বদলে এটিও ব্যবহার করা যায়।
বেশি পুরু মেকআপ নয়
অনেকেই ঘন মেকআপ করতে পছন্দ করেন। কিন্তু এতে ত্বক কৃত্রিম লাগে এবং গরমে গলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া পুরু মেকআপ লোমকূপের মুখ বন্ধ করে দেয়। তাই দিনের বেলায় কনসিলার আর বিবি ক্রিমেই কাজ চালিয়ে নিতে পারেন।
মেকআপ ব্রাশ পরিষ্কার রাখুন
নিজের মেকআপ ব্রাশ অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেবেন না। আবার অন্যের ব্রাশও ব্যবহার করবেন না। সপ্তাহে অন্তত একদিন মেকআপ স্পঞ্জ বা ব্রাশ শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে রোদে বা বাতাসে শুকিয়ে নিন। না হলে ত্বকে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
ত্বককে শ্বাস নিতে দিন
যেকোনো অনুষ্ঠান বা কাজ থেকে ফিরে দ্রুত মেকআপ তুলে ফেলুন। তৈলাক্ত ত্বক হলে মাইসেলার ওয়াটার, শুষ্ক ত্বক হলে তেল ব্যবহার করতে পারেন। এরপর ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগান। মেকআপ উঠে গেলে ত্বক অক্সিজেন পায়, যা ত্বক সুস্থ রাখার জন্য খুব জরুরি।
অতিরিক্ত মরা কোষ দূর করতে সপ্তাহে দুই দিন এক্সফোলিয়েশন করুন। এতে ত্বক মসৃণ থাকবে, জেল্লাও বজায় থাকবে।
মনে রাখবেন, রোজ মেকআপ করলে নিয়ম মেনে ত্বকের যত্ন নেওয়াই সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি। তাহলেই ত্বক থাকবে সুন্দর, সুস্থ আর ঝলমলে।
মন্তব্য করুন