মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

সূর্যালোকে ভরে তুলুন প্রাণ

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০৬:০৬ পিএম

শীতকালে নিয়ম করে রোদ পোহালেও গরমের দিনে আমরা যথাসম্ভব একে এড়িয়েই চলি। সর্বক্ষণ এসি বা ফ্যানবেষ্টিত রুমে নিজেদের আবদ্ধ রাখতেই পছন্দ করি। কিন্তু প্রতিদিন শরীরে নির্দিষ্ট পরিমাণে সূর্যালোক না ছোঁয়ালে বাসা বাধতে পারে স্মৃতিভ্রংশ, ডায়াবেটিসসহ নানান রোগ। মাঝারি মাত্রার রোদ মন ভালো করতে সালহায্য করে, হাড়কে মজবুত করে এবং কিছু নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে।

এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একটি গবেষণায় দেখিয়েছেন, ২০ মিনিটের মতো সময় হাতে রোদ লাগালে তা ত্বকে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করার জন্য যথেষ্ট, যার ফলে রক্ত নালীগুলো প্রসারিত হয় এবং রক্তচাপ নেমে আসে।

না চাইতেই পাওয়া ভিটামিন ডি: সূর্যালোকের উপকরিতা বলতেই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণের কথা কমবেশি সকলেরই জানা। খাবার দিয়ে শরীরের ভিটামিন ডি'র চাহিদা পূরণ হয় খুব কমই। হাড়, দাঁত, নখের সুরক্ষায় দরকার ক্যালসিয়াম। এই প্রক্রিয়ার শুরুটা হয় সূর্যের আলোর সাথে ত্বকের সংস্পর্শের মাধ্যমেই। তাছাড়া রিকেটস, অস্টিওপোরোসি নামক হাড় ক্ষয় রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য শরীরে রোদের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি।

হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে সূর্যরশ্মি: ভিটামিন ডি'র চাহিদা পূরণ ছাড়াও মানবদেহে রোদের আছে অসংখ্য উপযোগিতা। সূর্যালোক হরমোন নিঃস্বরণ বা তারতম্য ঘটিয়ে শরীরে ও মনে ফেলতে পারে নানারকম প্রভাব।

ঘুম: কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কেনেথ রাইট বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষরা সূর্য ডুবলেই ঘুমিয়ে যেত আর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে দিনের কাজ শুরু করতো। আমরা সেখানে দিনের বেশীরভাগ সময়ই কৃত্রিম আলোতে কাটিয়ে দিচ্ছি। ফলে আমাদের দেহের স্বাভাবিক চক্রটি ভেঙ্গে যাচ্ছে’। সূর্যালোক শরীরের প্রাকৃতিক ঘুম-জাগরণ চক্র নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদনে প্রভাব ফেলে, যা ঘুমের গুণমান উন্নত করতে পারে।

বিষণ্ণতা: সেরোটোনিন হরমোনের অভাবে বিষণ্ণতা দেখা দেয়। শীতকালে যেহেতু রোদ পাওয়াই যায়না, তারউপর দিন ছোট হয়, তখন এই ধরণের বিষণ্ণতা বেশি দেখা দেয়। এই সমস্যার চিকিৎসায় লাইট থেরাপি বা ফোটোথেরাপি ব্যবহৃত হয়, যেখানে বিশেষ আলো ব্যবহার করে প্রাকৃতিক সূর্যের আলোর অনুকরণ করা হয়। রোদ চোখের মাধ্যমে রেটিনায় পৌঁছায় এবং সেখান থেকে সেরোটোনিন নিঃসরণের সংকেত দেয়।

নারী-পুরুষজনিত হরমোন নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত সূর্যালোকে থাকার ফলে পুরুষদের টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পেতে পারে, যা পেশি শক্তি, এবং কর্মশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, নারীদের জন্য সঠিক পরিমাণ রোদ endocrine system বা হরমোন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এতে মাসিক ঋতুস্রাব চক্র নিয়মিত হয় এবং শরীরের হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে।

কতটা সূর্যালোক ক্ষতিকর নয়: সূর্যের আলোর ক্ষতি খুব বেশি নেই। সানস্ক্রিন বা কাপড়ের মাধ্যমে সূর্য লাগলে ভিটামিন ডি তৈরি হয় না। রোদে অনেক বেশি সময় ধরে থাকলে ত্বকের রঙ পরিবর্তন হয়, ত্বক পুড়ে যায়। তবে অনভ্যাসবশত হঠাৎ করে খুব বেশিক্ষণ থাকলে এই রশ্মি ত্বকের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। তখন কমপক্ষে SPF ১৫ যুক্ত সানস্ক্রিনসহ টুপি ও ফুলহাতা জামা ব্যবহার করা ভাল।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বিকেলের নাস্তায় মজাদার পালংশাকের লুচি
বিকেলের নাস্তায় মজাদার পালংশাকের লুচি
যেভাবে আয়নার দাগ দূর করবেন
যেভাবে আয়নার দাগ দূর করবেন
গলা ব্যথায় এড়িয়ে যাবেন যেসব খাবার
গলা ব্যথায় এড়িয়ে যাবেন যেসব খাবার
ইসবগুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
ইসবগুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা