বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫

প্যানিক অ্যাটাক হলে কি করবেন?

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:২৭ পিএম

একটি ভয়ংকর অসুখের নাম " প্যানিক অ্যাটাক "।এটি একটি মানসিক রোগ। আমাদের শারীরিক রোগের চিকিৎসা করলেও মানসিক রোগের চিকিৎসা করিনা। কিন্তু শরীর ও মন দুটোর ই যত্ন নিতে হবে।

কেন হয় প্যানিক অ্যাটাক

শিশু বা বড়দের মাঝে প্যানিক অ্যাটাকের কারণ কী তা সবসময় পরিষ্কার নয়। আমরা যা জানি তা হলো– কোন কিছু নিয়ে উদ্বিগ্ন বোধ করা অথবা কঠিন বা মানসিক চাপযুক্ত কোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া প্যানিক অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। এসব পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে:

  • বাড়িতে বা স্কুলে কোনো কঠিন অভিজ্ঞতার কারণে সৃষ্ট উদ্বেগ
  • পরীক্ষা, বন্ধুত্ব বা সম্পর্কের মতো বিষয়গুলো নিয়ে মানসিক চাপ
  • প্রিয়জনের মৃত্যু
  • নির্যাতন বা অবহেলার মতো ভীতিকর কোনো অভিজ্ঞতা
  • একটি সহিংস অভিজ্ঞতা

প্যানিক অ্যাটাক এর লক্ষণ

  • শ্বাসকষ্ট, দ্রুত শ্বাস নেওয়া বা শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া
  • মাথা হালকা হওয়া বা অচেতন হওয়ার অনুভূতি
  • আলো আরও উজ্জ্বল ও তীব্রতর মনে হওয়া
  • হার্টবিট দ্রুততর হওয়া এবং বুকে চাপ অনুভব করা
  • স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘাম হওয়া
  • পায়ে কাঁপুনি ও টালমাটাল ভাব
  • অশ্রুসিক্ত হওয়া, যেন তারা কান্না থামাতেই পারে না
  • মনে হবে কিছুতে আটকে গেছে, যেন তারা নড়াচড়া করতে পারছে না
  • পেট ফাঁপা বা অসুস্থ বোধ করা।

এই অ্যাটাক ৫ থেকে ২০ মিনিট স্থায়ী হয়।

প্যানিক অ্যাটাক শুরু হলে ওই মুহূর্তে করণীয় কী?

প্যানিক অ্যাটাক হলে ওই ব্যক্তিকে প্রথমত অস্থির হতে দেওয়া যাবে না, অস্থিরতা কমানোর চেষ্টা করতে হবে, পরিবারের সদস্যদের স্থির থাকতে হবে, তারাও যাতে অস্থিরতা না বাড়ায় সেটি খেয়াল রাখতে হবে। না জেনে চিকিৎসকের নির্দেশনা ছাড়া মুখে কোনো ওষুধ দেওয়া যাবে না। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে নিশ্চিত হতে হবে এটি প্রকৃত প্যানিক অ্যাটাক কি না।

মনে রাখতে হবে. রোগীর যদি ডায়াবেটিস বা হৃদরোগ থেকে থাকে তাহলে প্যানিক অ্যাটাক হলেও প্রথমে তাকে অবশ্যই সেই রোগের জন্য চিকিৎসকরা যে ওষুধ বা তাৎক্ষণিকভাবে যা করতে হবে বলেছেন সেটির প্রয়োগ করতে হবে।

প্যানিক অ্যাটাক প্রতিরোধে করণীয়

প্যানিক ডিজঅর্ডার সম্পর্কে জানতে হবে। তখন রোগী লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন যে এই সমস্যা শুধু হার্টের কারণে নাও হতে পারে। এর ফলে ভয় বা আতঙ্কের জায়গা কমে আসবে।

একবার প্যানিক অ্যাটাকের পর কোনো ব্যক্তি যদি কাউন্সিলিং সেশনে যান, কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি নেন তখন প্যানিক অ্যাটাক তাকে সহজে আক্রান্ত করবে না। তিনি নিজেই তার সমস্যা বুঝতে পারবেন।

প্যানিক ডিজঅর্ডার ছদ্মবেশী রোগ, প্যানিক ডিজঅর্ডারে কোনো ঝুঁকি নেই। তবে এর যে লক্ষণ সেই একই লক্ষণ নিয়ে কার্ডিয়াক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। দুটো ক্ষেত্রেই লক্ষণ একই রকম। ঝুঁকি তখনই, যখন সত্যিকারের হার্টের সমস্যাকে প্যানিক ডিজঅর্ডার মনে করা হবে।

তাই যে কোনো লক্ষণকেই শুরুতেই প্যানিক ডিজঅর্ডার বলে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। কার্ডিয়াক সমস্যা আছে কি না প্রথমে সেটি দেখতে হবে। সেটি না থাকলে পরে প্যানিক ডিজঅর্ডারের চিকিৎসা নিতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় সত্যিকারের হৃদপিণ্ডের সমস্যাকে প্যানিক ডিজঅর্ডার বলে ভুল করেন অনেকে। তখন রোগীর ক্ষতির আশঙ্কা রয়ে যায়।

আপনি যদি এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যান তবে এর সাথে লড়াই করতে যাবেন না। এর সাথে আপোষেও যাবেন না। কাউনসিলিং করাতে হবে। ধৈর্য্য ধরতে হবে। আল্লাহ আপনাকে সুস্থ করে দেবেন ইনশাআল্লাহ।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
শীতে সর্দি-কাশিতে সুরক্ষা দেবে যেসব খাবার
শীতে সর্দি-কাশিতে সুরক্ষা দেবে যেসব খাবার
ভূমিকম্প: আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের জন্য সতর্কবার্তা
ভূমিকম্প: আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের জন্য সতর্কবার্তা
কোনো সুসংবাদ পেলে যে দোয়া পড়া সুন্নত
কোনো সুসংবাদ পেলে যে দোয়া পড়া সুন্নত
শীতকালে কেন পানি পান করা জরুরি
শীতকালে কেন পানি পান করা জরুরি