
রাজধানীর ১৪২টি গুরুত্বপূর্ণ স্পটে একযোগে বড় মহড়া দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ৫০টি থানায় একযোগে বিশেষ এ মহড়া সাত হাজার পুলিশ সদস্য অংশ নেন।
শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চলে এই মহড়া। ডিএমপি সদর দপ্তর জানিয়েছে, এটি নিয়মিত নিরাপত্তা মহড়ার অংশ।
তবে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে রাজধানীর কাকরাইল গির্জায় ককটেল নিক্ষেপ, ধানমন্ডি শংকর এলাকায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের মশাল মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে পুলিশ সদস্যদের বাড়তি উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। রায়ট গিয়ার, হেলমেট, বডি আর্মারসহ পূর্ণ প্রস্তুতিতে তাঁরা অবস্থান নেন। এ সময় পথচারীদের সন্দেহ হলে ব্যাগ তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায়। সন্দেহজনক যানবাহনও থামিয়ে তল্লাশি করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ডিএমপির আটটি বিভাগের মধ্যে তেজগাঁও ১৬টি, রমনায় ৩৪টি স্পটে, মিরপুরে ১৪টি, মতিঝিলে ১৭টি, ওয়ারিতে ১৬টি, লালবাগে ১৫টি, গুলশানে ১৪টি, উত্তরায় ১৬টি স্পটে অর্থাৎ মোট ১৪২টি স্পটে পুলিশ মহড়া দিয়েছে।
ডিএমপির এক উপকমিশনার (ডিসি) জানান, পুলিশের মহড়াটি মূলত ফোর্স ও অফিসারদের এক্সিভিশন (প্রদর্শনী) টাইপের। যেমন- রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে পুলিশের নিয়ন্ত্রণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা। যারা অপরাধ করতে চায়, অরাজকতা করতে চায়- তাদের বিরুদ্ধে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘এটা আমাদের নিয়মিত নিরাপত্তা মহড়া। ফোর্স মোবিলাইজেশনের একটি অংশ, যা নিয়মিতই হয়ে থাকে।’
কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকির প্রস্তুতি কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না, কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। এটি আমাদের রুটিন কার্যক্রমের অংশ।’
‘ফোর্স মোবিলাইজেশন’ প্রক্রিয়ায় সাধারণত জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বাহিনীকে একত্রিত করা, প্রস্তুত রাখা ও মোতায়েনের অনুশীলন করা হয়। এতে রিজার্ভ ফোর্স সক্রিয় করা, জনবল ও সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখাসহ নানা অনুশীলন অন্তর্ভুক্ত থাকে।
সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ও চার্জ পয়েন্টের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি কার্যক্রম নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাত-দিন ঝটিকা মিছিল করছে। এ ছাড়া ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ১৩ নভেম্বর ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
নাশকতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে পুলিশ বাড়তি সতর্ক অবস্থানে থাকলেও—পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এর আগে চলতি বছরের ৫ আগস্টের আগে সীমিত আকারে মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো পুলিশের এমন মহড়া অনুষ্ঠিত হলো।
মন্তব্য করুন